আমেরিকা একটি দেশ যেখানে পৃথিবীর সবচাইতে বেশি মানুষ জেলে বাস করে। দুই থেকে তিন মিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় তিরিশ লক্ষ লোক, সারা পৃথিবীর হাজতবাসী লোক সংখ্যার শতকরা কুড়ি ভাগ একাই আমেরিকার দখলে। অনেকেই বলেন এই ‘আইন আর ফাইন’ আমেরিকার অপরাধ কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কেউ দেখতে চান না এত অপরাধ কমানোর নামে কত বড় বড় অপরাধ ঘটে। এই জেলের বাসিন্দাদের বেশিরভাগ কালো, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে অনেক আফ্রিকান আমেরিকান আছে যাদের টেক্সাস নামক স্টেস্টে বলা যায় বিনাবিচারে কিম্বা বিচারের নামে প্রহসন করে মৃত্যু দন্ড দেয়া হয়েছে। এরকম প্রায় চল্লিশজন কে মুক্ত করা হয়েছে কারণ তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ হাজির করতে পারে নি স্টেস্ট। অন্যদিকে কিছু কিছু শাদা-প্রধান স্টেস্টগুলোতে কালোদের যে কোন অপরাধে দেখলেই গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। যা একেবারেই অন্যায়। আমেরিকাতে পুলিশকেও গুলি চালাতে হলে প্রমাণ রাখতে হবে যে তার আর কোন উপায় ছিল না। সেই প্রমাণের দায়িত্বও পুলিশের ঘাড়ে।
মিজৌরি স্টেস্টের ফারগুসন শহরে একটি আঠারো বছরে কালো বালক কে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। তার কাছে কোন অস্ত্র ছিল না। পুলিশ বলেছে সে এক প্যাকেট সিগারেট চুরি করে পালাচ্ছিল। কিন্তু পুলিশ নাকি নিজের জীবনের ভয়ে গুলি করেছে, কয়বার? অন্তত দশ বার। মিজৌরি স্টেস্টের বিচার বিভাগ পুলিশ কে কোন দোষ দেয় নি। এরকম ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে ফ্লোরিডাতে হয়েছে, হয়েছে অন্য স্টেস্টেও। মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ বা ডেডলি অস্ত্র ব্যবহার পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার। আর তা বেছে বেছে কালোদের ওপরে হলে তা হয়ে দাঁড়াবে পরিস্কার বর্ণবাদে। ফারগুসন শহর ফুঁসে উঠেছে, প্রতিবাদ হচ্ছে অন্যত্রও। আইন দিয়ে রেসিজম বা বর্ণবাদ ঠেকানো গেলেও মনের মধ্যে যে রেসিজম বাস করে তা দূর করা সহজ নয়। আইন আর ফাইনের ভয়ে অনেকেই এই বর্ণবাদ লুকিয়ে রাখে, কিন্তু সুযোগ পেলেই বের হয়ে আসে কুৎসিত বর্ণবাদ, প্রকাশ প্রায় নিজের অজান্তেই। পুলিশের এই বর্বরতা সেই বর্ণবাদেরই নামান্তর!
মন্তব্য করুন