তাহলে কিছুক্ষণ আয়নার সামনে দাড়িয়ে থাকুন। দরজা বন্ধ করুন। শরীর কিছুটা হালকা করুন। ব্যাস… ত্রিশ মিনিট সময় দিন আমাকে।
আমাদেরকে সৃষ্টি করেছে কে? এই নিয়ে ইতং বিতং করার মত জ্ঞান আমি রাখি না। তবুও মাঝে মাঝে আমার অবচেতন মন চিন্তা করে।
আমি চিন্তা করতে না চাইলেও সে চিন্তা করে। …আমাদের অচেতন এবং অবচেতন মন কী কী চিন্তা করে তার ১০ ভাগো আমরা জানি না। যা জানি তার উপর আমাদের খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
মাঝে মাঝে আয়নার সামনে গিয়ে নিজের দিকে তাকাই। নিজের দিকে মানে একেবারে চোখের দিকে। চোখের দিকে মানে চখের ভেতরের কালো অংশের ভেতরে আরেকটা চোখ আছে।
একসময় আয়নার ওপাশ থেকে নিজেকে চিনতে পারিনা এমন অশ্মরীর কাউকে দেখি। যে মানুষটা দেখতে অবিকল আমার মত। কিন্তু আমি না!
আমার ধারণা মানুষ ত্রিশ মিনিট আয়নার সামনে স্পষ্ট দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে একসময় আয়নায় সে নিজেকে দেখে না; চেহারা ঠিক আছে তবুও অন্য কাউকে দেখে।
অবশ্য নিজের ভেতরে অন্য একজনকে দেখার একটি ব্যাখ্যা আমার কাছে আছে। কিছুদিন আগে একটি বইতে পড়ছিলাম; মানুষের তীব্র অবচেতন মনের উত্তেজিত প্রতিক্রিয়ার ফলে সত্যি সত্যি অশ্মরীর শব্দ কিংবা দৃশ্য সে শুনতে কিংবা দেখতে পারে।
কিছু কিছু ড্রাগ নিলে জন্মের প্রথম মুহূর্তের কিছু সৃতি কিংবা আজগবি দৃশ্য মানুষ দেখতে পায়। সে যাই হোক; কথা বলছিলাম চোখ নিয়ে।
কী দেখছেন? আপনে চোখ দেখছেন? নাকি চোখ আপনাকে? আপনে সৃষ্টিকর্তাকে দেখতে চান? তাহলে কিছুক্ষণ এভাবে আয়নার সামনে দাড়িয়ে থাকুন।
খেয়াল রাখবেন আপনার দৃষ্টি থাকবে চোখের ভেতরের তৃতীয় চোখে। যেখানটায় চিকচিক করে আশা এবং স্বপ্ন ভঙ্গের গল্প।..
পৃথিবীর সব থেকে মূল্যবান ক্যামেরা হল মানুষের চোখ। চোখ না থাকলে এক লক্ষ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা দিয়েও কিছু দেখা সম্ভব হবে না।
উইলিয়াম ফ্রে ১৫ বছর চোখের পানি নিয়ে গবেষণা করে বলেছেন— ( ৩ টি পয়েন্ট তুলে দিলাম)
“চোখের পানি কোনো সাধারণ কিছু নয়। এটি পানি, শ্লেষ্মা, তেল, ইলেক্ট্রোলাইট-এর এক জটিল মিশ্রণ।
১- এটি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী, যা চোখকে ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে।
২ -এটি কর্নিয়াকে মসৃণ করে, যা পরিষ্কার দৃষ্টির জন্য অত্যাবশ্যকীয়। এটি কর্নিয়াকে যথেষ্ট আর্দ্র রাখে এবং অক্সিজেন সরবরাহ দেয়।
৩ – এটি চোখের জন্য ওয়াইপার হিসেবে কাজ করে, যা চোখকে ধুয়ে পরিষ্কার করে ধুলোবালি থেকে।”
চোখের পানি যদি শুধুই পানি হতো, তাহলে তা ঘর্ষণের কারণে চোখ শুকিয়ে জ্বালা পোড়া করত। শীতকালে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি হলে পানি শুকিয়ে জমে বরফ হয়ে যেত।
…আবার চোখের পানি যদি শুধুই এক ধরনের তেল হতো, তাহলে তা চোখের ধুলাবালি পরিষ্কার না করে উলটো আরও ঘোলা করে দিত।
চোখের পানির মধ্যে প্রকৃতির লক্ষ উপাদান থেকে এমন বিশেষ কিছু উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে, যার এক বিশেষ মিশ্রণ একই সাথে পরিষ্কার, মসৃণ এবং জীবাণু মুক্ত করতে পারে এবং অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, প্রকৃতিতে একমাত্র মানুষের ক্ষেত্রেই আবেগ থেকে চোখের পানি আসে, যা আবার সাধারণ চোখের পানি থেকে আলাদা। এতে ২৪% বেশি প্রোটিন, লিউসিন-এঙ্কেফালিন, প্রোল্যাক্টিন এবং ACTH হরমোন রয়েছে।
কান্নার সময় এগুলো চোখের পানির সাথে বেরিয়ে আসে। এই হরমোনগুলো মানুষের মানসিক চাপের জন্য দায়ী। একারণেই কান্নার পরে মানুষের মানসিক চাপ কমে যায়, মানুষ হালকা বোধ করে।
চোখের আরেকটি চমকপ্রদ ঘটনা নিয়ে বলি।
মানুষের চোখ প্রতি সেকেন্ডে ৩০-৭০বার কাঁপে। এই কাঁপাটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম: একটি কাগজ যতখানি পাতলা, তার ৭০ ভাগের ১ ভাগ যতখানি হয়, চোখ ততটুকু কাঁপে।
…এই অত্যন্ত সূক্ষ্ম মাপে কাঁপার কারণে চোখের কর্নিয়া এবং রেটিনা অত্যন্ত অল্প পরিমাণে সবসময় ঘুরতে থাকে এবং বাইরে থেকে আলো রেটিনার আলোক সংবেদনশীল কোষে বিভিন্ন দিক থেকে পড়তে থাকে।
যদি তা না হতো, তাহলে আমরা যদি কোনো কিছুর দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকতাম, তাহলে মুহূর্তের মধ্যেই আমাদের দৃষ্টি থেকে সব রঙ চলে গিয়ে সাদা-কালো ছবি তৈরি করত। স্থির জিনিসটি যতক্ষণ না-নড়ত, ততক্ষণ আমরা আর তা শনাক্ত করতে পারতাম না।
আমরা কখনও কোনো স্থির জিনিসের দিকে স্থিরভাবে তাকিয়ে থাকতে পারতাম না, বার বার চোখ ঘুরাতে হতো অথবা আশেপাশের আলোর দিক বার বার পরিবর্তন করতে হতো।
ধন্যবাদ… ত্রিশ মিনিট সময় নিয়ে আশা করি আয়নার সামনে দাঁড়াবেন। বেশি কিছু না সৃষ্টিকর্তার নেয়ামত অনুভব করার জন্য বিস্ময়কর চোখের যাদুকরী খেলাই যথেষ্ট।
এত সুন্দর গোছানো ব্যাপার গুলো আপনা আপনি সৃষ্টি হয়ে গেছে? একদম আপনা আপনি..!
অবিশ্বাসীরা এটা মানে যে একটা কম্পিউটার আপনা আপনি সৃষ্টি হয় না…
একটা মোবাইল কিংবা ক্যামেরাও নিজ থেকে সৃষ্টি হয় না…
কম্পিউটার থেকে অনেক বেশি ডাটা যে ব্রেইনে জমা থাকে ; মোবাইল থেকে অনেক বেশি নেটওয়ার্ক যে মস্তিস্কে টেলিপ্যাথি উপায়ে কাজ করে… ক্যামেরা থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ল্যান্স যে চোখের ভেতরে দেয়া হয়েছে… এই গুলা আপনা আপনি সৃষ্টি হয়ে গেছে !!!
যারা বুঝতে চায় না… তর্ক করবেন না…
আমি এক সময় প্রচুর নাস্তিকের সাথে অংক করেছি… তাদের সূত্র হল ২ + ২ = ৫ !
আমি বললাম ২ + ২ তো চার হবে…
তারা বলে এটাই বিবর্তবাদের সূত্র !
আমি বললাম এই সূত্র কে বানিয়েছে ?
তারা বলে – ডারউইন…
‘ তো ডারউইন নিজেই বলেছে তার সূত্র এখনো প্রমাণিত না… এটা জানেন না? ‘
মন্তব্য করুন